Wednesday, October 17, 2012

P. N. পিসি



তুই-আমি নিশ্চুপ, কথা বলছে আমাদের বন্ধুরা, আমাদের গলায়
তোর অজান্তেই আমি এক গ্রীক রাক্ষস হয়ে গেছি-
কথা বেরোচ্ছে না, বেরোচ্ছে কাইমেরা মুখ-নিসৃত গরল- জ্বালা ধরানো, মন পোড়ানো
তবু তোর নেশা হচ্ছে, তবু লোক ভোলানো, চিনি-গোলা কথার জাল কেটে
কালো কাক উড়ে গেলো অবিন্যস্ত পরিচিতদের খোলসে ঠোকর দিতে।
কার কথা ভেবেছিলি কারগিল ঘোষণার আগে?
“চেহ্‌রা তেরা অউর চাঁদ মেরি” বলে কার মুর্দাফরাস হয়েছিলি, ভার্চুয়াল?
ওই ছুতোরের বাচ্চা বলেছিলো চড় খেয়ে আরেকটা গাল পেতে দিতে,
তার বদলে গাল দিলি?
গালিলিও-ও মেনেছিলো, কর্তৃপক্ষ গলায় বাঁশ দিয়ে আখের রস বের করেছিলো-
তা বলে কি আর নিন্দে লুকিয়েছিলো, পেটের ওমে? ঠিকই জগৎ জুড়ে গাল পাড়ছে
সমগ্র বিজ্ঞান-সন্ততি, চর্চা করছে চার্চের।
আমি-তুই নগণ্য, তাই কাউকে বলিনি, গাল টিপতে আর দিতে একইরকম ভাল লাগে।
সেই ভরসা বুকে নিয়ে, রাস্তার প্রতিটি বাড়ির প্রতি তলায়, কেউ না কেউ,
“ওর ভালর জন্যেই” বলে পরনিন্দে করছে...

গ্লোবাল ওয়ার্মিং মানে কি? দুনিয়ায় পোকার সংখ্যা বেড়ে চলা?

অসুখ-বিসুখ



একটা মজার গল্প শুনবেন? মানে, মজা কতটা লাগবে জানিনা, তবে গল্পটা অনেকটা সত্যি, আর বেশ গোলমেলে। শেষ অবধি মজা পেয়ে গেলে আমাকেই দোষ দেবেন ’খন। গল্পের চরিত্রদের নাম বদলেই দিচ্ছি- প্রায় সত্যি ঘটনা কিনা!

পূর্ব ভারতের একটা বড় শহর। খুব বেশি বড় নয়, তবে পুরনো হওয়ার সুবাদে জনসংখ্যা সহ্যের থেকে বেশি। ঘিঞ্জি, অল্প নোংরা- কিন্তু তার জন্য কি আর লোকসংখ্যা কমেছে কোনকালে ভারতে? তা, সেই শহরে অনেক ডাক্তার। নানা বিষয়ের, নানা রোগের বিশেষজ্ঞ পুরনো, নতুন, কচি, পোড়খাওয়া- পুরো বর্ণালী পাওয়া যায় এখানে। আশপাশের বিরাট বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে কোথাও কোন ভাল হাসপাতাল নেই- এদিকে এখানে একটা ডাক্তারি কলেজ পর্যন্ত রয়েছে। রুটির ওপর ব্যাঙের ছাতার মতো তাই নিশ্চিতভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ওষুধের দোকান- ভাল কথায় কেমিস্ট, ফার্মাসিস্ট, প্যাথোলজি ল্যাব এটা-সেটা-রা এটা-সেটা-রা।

এগুলো হলো সেই সব জিনিস, যা জনগণের চোখের সামনে থাকে। সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাজার যাওয়ার সময় নতুন গজিয়ে ওঠা দু’টো ওষুধের দোকান দেখে কাকা-জ্যাঠারা মন্তব্য করেন-“এত ডাক্তার, এত দোকান- কিন্তু তিন বছর ধরে কোমরের ব্যথার চিকিচ্ছে করতে পারলো না ব্যাটারা- চোরের দল সব”। অথবা, “দেখছিস কি? এই হচ্ছে গ্লোবালাইজেশনের ফল, বুঝলি! আমাদের ছোটবেলায় হরেনপিসে দুটো-চারটে গুলি দিয়ে দিতেন, একদিনে চাঙ্গা। এখন? পুরো পেনশন শেষ হয়ে যাবে, তবু শরীর ঠিক হয় না মড়া!”। এসব কথা কতটা অভিজ্ঞতার ফল আর কতটা বিরক্তির বিষ- সে নিয়ে তর্কে না ঢুকেই এটুকু বলা যায়, যে এ সমস্তই হিমশৈলের উপরেরটুকু মাত্র।

চোখে যা দেখা যায়না, তার অনেক রকম, অনেক গড়ন। গল্পকে মহাভারত না বানিয়ে আমরা তাই ততটুকু বলবো, যা গল্পের প্রয়োজনে লাগে।