Monday, November 26, 2012

3.1415926...


মলের দরজা দিয়ে নাচতে নাচতে বেরোচ্ছি, এমন সময় শুনি- “এই, শোনো, এরা বলছে, ‘লাইফ অব পি’ বইটা নাকি ভাল হয়েছে। টিকিট কেটে নিই?”

কুল্যে দেড়খানা বাক্য, তাতেই আমায় কুপোকাত করে দেওয়ার মতো যথেষ্ট আগুন ভরা। প্রথম কথা, সিনেমাটা সবে আমি দেখে বেরোলাম- ওর সাথে প্রস্রাবের সম্পর্ক দূর-দূরান্তে নেই। ওটা পি (Pee) নয়, পাই (Pi)তা ভদ্রলোককে না হয় ক্ষমাঘেন্না করে দেওয়া গেলো, হতে পারে অঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ নেই, বা ওই নম্বরটির ‘জীবন’ নিয়ে সিনেমা হতে পারে, সেটা কল্পনাতেও আনতে পারেননি। আমি চাইলেই, “সেকি, পাই শোনেননি?” বলে নাক উঁচু করতেই পারি, কিন্তু তাতে নাকের ডগা চিলে খেয়ে যাবে।

কিন্তু ওই যে, ‘বই’! ওটিতো অত সহজে হজম হওয়ার নয় চাঁদ! যে কোন সিনেমাই বঙ্গ-লেহনে ‘বই’ হয়ে গেলে তা আমার পেটে তোতার পেটের মতোই গজগজ করে, হজম হয়না। তার জন্যে সত্যবাবু দায়ী। ‘বিষয় চলচ্চিত্র’ বইটিতে পোস্কার করে কয়েচেন, বাঙালি সিনেমা বলতে বুঝতো শরৎবাবুর গপ্পো- তাই সিনেমা আর বই চিরকালের মতো গুলিয়ে চুরমুর হয়ে গেছে। কিন্তু সত্যি বলতে, এই ওব্যেসটা যে কতটা ক্ষতিকর, তা ভদ্রলোকের কথা শুনে বুঝলাম। Life of Piসত্যিই ভাল বই হয়েছে। বছর দশেক আগেই সেটা গোটা দুনিয়ার লোকে জানতে পেরেছে, বুকার পুরস্কারটি বগলদাবা করার সঙ্গে সঙ্গে। তাই, “বইটা দেখলাম, বেশ হয়েছে...” বললে, ঘরপোড়া, থুড়ি, বিদগ্ধ পাঠক ভাববেন, অ, বুজি থান-ইট বইডার কতা কয়েসে। ভাবুন তো, কি বিচ্ছিরি ভুল বোঝাবুঝি!
সে যাকগে। অনেকক্ষণ তবলা বাঁধলাম, এবার বোল তোলা যাক। প্রথমে ছোট করে বলি। বইটা, থুড়ি, থুত্থুড়ি, সিনেমাটা (কি ছোঁয়াচে রোগ বলুন তো!) দেখে বহু, বহুদিন পরে আবার সিনেমাহলের মজা বুঝলাম।

ভাল স্পেশাল এফেক্ট বিশেষ দেখিনা ভেবে নাক সিটকোবেন না। আমি ঘাগু মাল।