৪
দুটো ছ’টাকা দামের কফির কাপ, এক প্লেট বাটার ফ্রাই (জানি ওটাকে ব্যাটার ফ্রাই বলে, তমিশ্রা কুড়ি-পঁচিশ বার বলেছে, তবু আমার কাছে দোকানের মেনু ভগবান), এক প্যাকেট সিগারেট, অনেকটা প্রেমের সঙ্গে একটু-আধটু রাগারাগি, আমি আর প্রবীর- এই ছিল আমার প্রথম প্রেমের প্রথম এক মাসের দৈনিক ছবি। নন্দন-এর টিকিট কাউন্টারটা ছাড়িয়ে আকাদেমীর টিকিট কাউন্টারের দিকে যেতে যে ফাঁকা জায়গাটা, ওইখানে ছিল আমাদের রাদেঁভু পয়েন্ট। মে মাসের গরম, ক্লাসমেটদের বাঁকা চাউনি, জেম্মার খবরদারি, ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন মায়ের কাছে করা অঙ্গীকার, সন্ধে হলে পুলিশের ‘মদন-ভ্যানে’ ওঠার ভয়- কিছুই আমাদের দমাতে পারেনি। পার্সে কখনোই টাকা বেশি থাকে না, তায় কোথাও বসতে হলেই কিছু না কিছু কিনতে হয়- সব মিলিয়ে সিনেমা হলের অন্ধকারের আবডালটা খুব বড় বিলাসিতা ছিল আমাদের কাছে। তবু জানতাম আমারই মতো প্রবীরও টাকা জমাচ্ছে মাসে অন্তত একবার কোন কমদামী সিনেমা হলে ঢোকার জন্যে। কলকাতায় যখন প্রথম মাল্টিপ্লেক্স এলো, সব জায়গায় কি লাফালাফি- স্বাধীন হল-মালিকদের ভাত মারা যাচ্ছে। একটা কথা কেউ খেয়াল করেনি,
Wednesday, December 21, 2011
Friday, December 16, 2011
ঈশপ
আমি বুঝলি চিরদিন এরকম ছিলাম না,
বিশ্বাস কর, একদম স্বাভাবিক ছিলাম।
একজন নিখুঁত কচ্ছপ ছিলাম, জানিস-
তোর সাথে তো ছোটবেলা থেকে মিশি, কখনও
মনে হয়েছে, আমার গন্ডি ছাড়িয়ে কিছু করেছি?
না, তোরও দোষ নেই, আমারও না।
সুন্দর জঙ্গুলে জীবন কাটাতাম,
খাবার, বাসস্থান- কিছুই মেলানো যেত না,
তবু একসঙ্গে থাকতাম।
গল্পটা কে প্রথম পড়েছিল-
তুই, না আমি?
বাজে, জঘন্য গল্প।
বিশ্বাস কর, তোর পায়ে পড়ি, ভাল লাগেনি।
কেমন একটা মাথা ঘুরে গিয়েছিল।
বিপ্লবের ইচ্ছে জেগেছিল।
ইচ্ছে করেছিল, দেখাই আমারও ক্ষমতা আছে।
তোকে তাই দৌড়তে বলেছিলাম।
কেন রাজি হলি,
কেন রাজি হলি তুই?
আমারই দোষ, তোর আঁতে ঘা দিয়েছিলাম।
কি দরকার ছিল? আত্মবিশ্বাস ছিল খুব, না?
তুই মান বা না মান,
তোকে খুব ভাল করে চিনি, নিজের থেকেও।
জানতাম, তুই হারবি। তোকে ছাড়িয়ে যাব।
গল্পের খরগোশ তো হেরেছিল-
তুই এসেই পৌঁছতে পারলিনা, হারিয়ে গেলি মাঝপথে-
হারিয়ে দিয়ে গেলি আমায়।
***************************************
[হেইডাও সেম কেস... কিস্যুই হয় নাই... :'( ]
বিশ্বাস কর, একদম স্বাভাবিক ছিলাম।
একজন নিখুঁত কচ্ছপ ছিলাম, জানিস-
তোর সাথে তো ছোটবেলা থেকে মিশি, কখনও
মনে হয়েছে, আমার গন্ডি ছাড়িয়ে কিছু করেছি?
না, তোরও দোষ নেই, আমারও না।
সুন্দর জঙ্গুলে জীবন কাটাতাম,
খাবার, বাসস্থান- কিছুই মেলানো যেত না,
তবু একসঙ্গে থাকতাম।
গল্পটা কে প্রথম পড়েছিল-
তুই, না আমি?
বাজে, জঘন্য গল্প।
বিশ্বাস কর, তোর পায়ে পড়ি, ভাল লাগেনি।
কেমন একটা মাথা ঘুরে গিয়েছিল।
বিপ্লবের ইচ্ছে জেগেছিল।
ইচ্ছে করেছিল, দেখাই আমারও ক্ষমতা আছে।
তোকে তাই দৌড়তে বলেছিলাম।
কেন রাজি হলি,
কেন রাজি হলি তুই?
আমারই দোষ, তোর আঁতে ঘা দিয়েছিলাম।
কি দরকার ছিল? আত্মবিশ্বাস ছিল খুব, না?
তুই মান বা না মান,
তোকে খুব ভাল করে চিনি, নিজের থেকেও।
জানতাম, তুই হারবি। তোকে ছাড়িয়ে যাব।
গল্পের খরগোশ তো হেরেছিল-
তুই এসেই পৌঁছতে পারলিনা, হারিয়ে গেলি মাঝপথে-
হারিয়ে দিয়ে গেলি আমায়।
***************************************
[হেইডাও সেম কেস... কিস্যুই হয় নাই... :'( ]
সোজা সাপ্টা কথা
- “স্পষ্টবক্তা মেয়েটার সামনে শ্রদ্ধায় নুয়ে পড়া যায়,
আহ্লাদে গদগদ হওয়া যায়, গর্বে বুক ফেটে যায়;
ক্রুদ্ধ হয়ে পাশ কাটানো বা ঝগড়া করাও বিচিত্র নয়—
কিন্তু, ... পরম নির্ভরতায় কাঁধে হাত রাখা যায় কি?”
আপনি বলবেন- “হ্যাঁ, যাবে না কেন? অবশ্যই যায়,
একশোবার যায়। যায়, যায়, যায় ...”
- “আঃ, অত জোর দিচ্ছেন কেন? মনে মনে সাপোর্ট পাচ্ছেন না তো?
ভয় নেই, আমি স্পষ্টবক্তা নই, পেট পাতলাও নই-
কাউকে বলে দেব না যে আপনার লাস্ট রিলেশনটা......”
- “ক্ষেপছেন কেন? জানি, বলবেন, এখন যিনি-শুক্লাদি, তিনিও তো স্পষ্টবক্তা।
কই, তাঁর সঙ্গে তো...
বললাম তো, আমি স্পষ্ট কথা বলিনা, তবু, সবাই তো দেখতে পায়,
আপনার আজকাল তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাওয়া-”
- “আমি!! কেন? ও বাবা, আর্টসের মেয়ে; স্যারের সাথে
সন্ধের পর বাড়ি ফিরছে দেখেই ভাবলেন......”
- “রাগ করবো কেন? সত্যি বলবো, আজ তোমার টেবিলটা
গুছিয়ে দিতে দিতে খুব গান গাইছিলাম, গুনগুন করে,......
এখনো ভাবছো কেন বলিনা? তোমার ভাল লাগতো,
যদি প্রথম দিন স্পষ্ট করে বলতাম- ‘আপনাকে ভালবাসি’? ”
***************************************************
(এইটে কিছুই হয়নি... গদ্য-পদ্য কারে কয়, তা-ই জানি না, তায় আবার গদ্য কবিতা!!)
আহ্লাদে গদগদ হওয়া যায়, গর্বে বুক ফেটে যায়;
ক্রুদ্ধ হয়ে পাশ কাটানো বা ঝগড়া করাও বিচিত্র নয়—
কিন্তু, ... পরম নির্ভরতায় কাঁধে হাত রাখা যায় কি?”
আপনি বলবেন- “হ্যাঁ, যাবে না কেন? অবশ্যই যায়,
একশোবার যায়। যায়, যায়, যায় ...”
- “আঃ, অত জোর দিচ্ছেন কেন? মনে মনে সাপোর্ট পাচ্ছেন না তো?
ভয় নেই, আমি স্পষ্টবক্তা নই, পেট পাতলাও নই-
কাউকে বলে দেব না যে আপনার লাস্ট রিলেশনটা......”
- “ক্ষেপছেন কেন? জানি, বলবেন, এখন যিনি-শুক্লাদি, তিনিও তো স্পষ্টবক্তা।
কই, তাঁর সঙ্গে তো...
বললাম তো, আমি স্পষ্ট কথা বলিনা, তবু, সবাই তো দেখতে পায়,
আপনার আজকাল তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাওয়া-”
- “আমি!! কেন? ও বাবা, আর্টসের মেয়ে; স্যারের সাথে
সন্ধের পর বাড়ি ফিরছে দেখেই ভাবলেন......”
- “রাগ করবো কেন? সত্যি বলবো, আজ তোমার টেবিলটা
গুছিয়ে দিতে দিতে খুব গান গাইছিলাম, গুনগুন করে,......
এখনো ভাবছো কেন বলিনা? তোমার ভাল লাগতো,
যদি প্রথম দিন স্পষ্ট করে বলতাম- ‘আপনাকে ভালবাসি’? ”
***************************************************
(এইটে কিছুই হয়নি... গদ্য-পদ্য কারে কয়, তা-ই জানি না, তায় আবার গদ্য কবিতা!!)
মরণের পারে
কালিদাস কি বলে জানো?
হাওয়ার দেশের রেলগাড়িটা
ফুয়েল আমার পাগলামিটা
রেলগাড়িটা আমার মিতে,
দিনরাত্তির গ্রীষ্ম- শীতে
অথচ যখন অনেক পরে
“মেঘ-পিওনের ব্যাগের ভেতর মনখারাপের দিস্তা”।
হাওয়ার দেশের রেলগাড়িটা
ফুয়েল আমার পাগলামিটা
এক নিমেষেই লাফিয়ে পেরোয় এভারেস্ট আর তিস্তা।
রেলগাড়িটা আমার মিতে,
দিনরাত্তির গ্রীষ্ম- শীতে
তোমারই জন্য বেগার খাটছি আমরা দু’জন।
অথচ যখন অনেক পরে
Thursday, December 15, 2011
যে রাঁধে, সে চুমুও খায়
হাতি দেখেছেন? আমি ওর’ম দেখতে। ফ্যাকাশে হাতি। বৈশিষ্ট্যহীন হাতি। ডায়েট করা হাতি, কিন্তু হাড়জিরজিরে নই। শুঁড় নেই। মাথায় চুল আছে, চোখে চশমা। ন্যাজ আছে, তবে লুকনো। গায়ের রঙ, বাবা (চোখ বন্ধ করে) বলেন ‘উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ’। গাল ফোলা, বেঁটে হাতি। তেমন করে বললে অবশ্য সকলকেই হাতির মতো দেখতে। সে যাকগে, আসল কথা হলো- এইরকম দেখতে একটা হাতিকে দেখার জন্যে নিশ্চয়ই আপনি বাড়ি থেকে উজিয়ে আলিপুর আসবেন না, তাই না? দেখতেই যদি না আসেন, তবে তার লেখা পড়ার জন্যে ঢাক পিটিয়ে তৈরি করা ব্লগে আসবেন কি জন্য? তৎসত্ত্বেও যদি দিক ভুলে এসে পড়ে থাকেন, তবে আপনি নেহাত মাথামোটা। হাতির মতো। আচ্ছা, চালাক লোকেদের কেউ মাথা রোগা বলেনা কেন? সত্যি নয় বলে, নাকি বেশি কথা বলার ভয়ে? আমার তো মনে হয়, আসলে মাথামোটা মানে আগে বুদ্ধিমানই ছিল, পরে নিন্দুকে (যারা কিছুতেই আপনাকে আমাকে দেখতে পারেনা) মানেটা পালটে দিয়েছে। সেই জন্যেই আমি এখনো আশা করে আছি আপনাকে মাথামোটা বলায় আপনি রাগ করেন নি। নিশ্চয়ই করেন নি। নইলে লেখাটা এখনো পড়ে চলেছেন কেন?
Tuesday, December 13, 2011
জেঠিমার ঝুলি
৩
আমার নাকি কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতটাই কমে যাচ্ছে, যে কিছুদিন পরে নিতান্ত ভাল-মন্দের বিচারও আর করে উঠতে পারবো না। এই সিদ্ধান্ত আমার নয়, কোন ডাক্তারেরও নয়, শ্রীমতি সবজান্তা তিতিরের। কোন এক সাময়িক পত্রিকায় পড়েছে যে টিভি দেখার সঙ্গে বুদ্ধি কমে যাওয়ার সরাসরি যোগ আছে- ব্যস্, বকে বকে কানের পোকা খেয়ে ফেলল। যতই বোঝাই, ওরে, পরের সংখ্যায় দেখবি আবার উল্টো কথা বলেছে, তাও নতুন সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে- কে কার কথা শোনে? ‘সহচরী’ তে লিখেছে মানে ও নিশ্চয়ই বেদেও লেখা আছে। শেষ পর্যন্ত শান্তি রক্ষা করতে মেনেই নিলাম যে আমার বুদ্ধির গ্রাফ নিম্নমুখী। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলো।
সাময়িক বলছি কেন?
আমার নাকি কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতটাই কমে যাচ্ছে, যে কিছুদিন পরে নিতান্ত ভাল-মন্দের বিচারও আর করে উঠতে পারবো না। এই সিদ্ধান্ত আমার নয়, কোন ডাক্তারেরও নয়, শ্রীমতি সবজান্তা তিতিরের। কোন এক সাময়িক পত্রিকায় পড়েছে যে টিভি দেখার সঙ্গে বুদ্ধি কমে যাওয়ার সরাসরি যোগ আছে- ব্যস্, বকে বকে কানের পোকা খেয়ে ফেলল। যতই বোঝাই, ওরে, পরের সংখ্যায় দেখবি আবার উল্টো কথা বলেছে, তাও নতুন সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে- কে কার কথা শোনে? ‘সহচরী’ তে লিখেছে মানে ও নিশ্চয়ই বেদেও লেখা আছে। শেষ পর্যন্ত শান্তি রক্ষা করতে মেনেই নিলাম যে আমার বুদ্ধির গ্রাফ নিম্নমুখী। সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলো।
সাময়িক বলছি কেন?
'অ'-ঘৃণা
মাতৃভাষায় চাষ করে খাই, জবাই করেছি ব্যাকরণ বই,
ইঙ্গ-হিন্দি আক্রমণেও করতে পারেনি প্রান্তিক-
‘LMAO’ থেকে ‘কেন কি’ পেরিয়ে,
‘মোবাইল’ থেকে ‘কি-বোর্ড’ দাপিয়ে-
নিঃসঙ্কোচে চালিয়ে দিয়েছি ‘গুচ্ছ’ কিংবা ‘রাপচিক্’।
‘চাট’ খাও? তবে নিরীহ তুমি, ‘ল্যাদ’ খেলে তুমি আলসে,
কিচ্ছু হবেনা জীবনে তোমার, ‘বার’ খেলে কমবয়সে।
‘বীভৎস’ বলে ‘দারুণ’ বোঝাই, ‘উত্তাল’ মানে? Same!
বাবাদের যুগে ‘অসভ্য’ বলে নায়িকা বোঝাত ‘প্রেম’!
শব্দ আমার, অর্থও তাই, একের কাপড়ে অন্যে সাজাই-
‘ছড়িয়ে’ যাক না, কেই বা দিচ্ছে সে জন্যে আর নাকখত?
বরং একটু এগোই চলো না,
‘একঘর’ কোন বঙ্গ-ললনা
আদর করলে, লাজে রাঙা হয়ে, চুমু খেয়ে বলি-‘বাঞ্চোৎ’!!
***************************************
৬ মাত্রা। মাত্রাবৃত্ত।
ইঙ্গ-হিন্দি আক্রমণেও করতে পারেনি প্রান্তিক-
‘LMAO’ থেকে ‘কেন কি’ পেরিয়ে,
‘মোবাইল’ থেকে ‘কি-বোর্ড’ দাপিয়ে-
নিঃসঙ্কোচে চালিয়ে দিয়েছি ‘গুচ্ছ’ কিংবা ‘রাপচিক্’।
‘চাট’ খাও? তবে নিরীহ তুমি, ‘ল্যাদ’ খেলে তুমি আলসে,
কিচ্ছু হবেনা জীবনে তোমার, ‘বার’ খেলে কমবয়সে।
‘বীভৎস’ বলে ‘দারুণ’ বোঝাই, ‘উত্তাল’ মানে? Same!
বাবাদের যুগে ‘অসভ্য’ বলে নায়িকা বোঝাত ‘প্রেম’!
শব্দ আমার, অর্থও তাই, একের কাপড়ে অন্যে সাজাই-
‘ছড়িয়ে’ যাক না, কেই বা দিচ্ছে সে জন্যে আর নাকখত?
বরং একটু এগোই চলো না,
‘একঘর’ কোন বঙ্গ-ললনা
আদর করলে, লাজে রাঙা হয়ে, চুমু খেয়ে বলি-‘বাঞ্চোৎ’!!
***************************************
৬ মাত্রা। মাত্রাবৃত্ত।
মম চিত্তে নিতি নৃত্যে...
২
আসল নামটা নাহয় না-ই বললাম। ধরে নিন ওর নাম তিতির। ওই যে আমায় ‘জেম্মা’ বলে ডাকে আর কি। আগের দিন বলছিলাম না, আমাদের দুই অসমবয়সী বন্ধুর সুখ-দুঃখের কথা- শেষ করেছিলাম স্বগতোক্তি দিয়ে। আজ তার ব্যাখ্যা দেওয়া যাক। সত্যিটা খুব পরিষ্কার। ওর জেঠু বেঁচে থাকলে মোটেই ভাল হতো না। অন্তত আমার পক্ষে। না, লোকটা খারাপ ছিলো না। ভালবেসেই বিয়ে করেছিলাম। তখন কথায় কথায় জীবন শেষ হওয়ার কথা ভাবতাম। জীবনের বিশেষ দাম ছিলো না। ‘ওকে ছাড়া বাঁচবো না’, ‘কলকাতা ছাড়লে বাঁচবো না’, ‘নাচ ছাড়লে মরে যাবো’- এইসব। যারা মুখ বেঁকিয়ে বলতো- ও সব বিয়ের পরে জানালা দিয়ে পালাবে- তাদের উদ্দেশ্যে মনে মনে বলতাম, ‘এত তীব্র আমার অনুভূতি, খামোকা পাল্টাতে যাবে কেন? দেখিয়ে দেবো আমার ধৈর্য আর ভালবাসার কত জোর।’ তখন শুধু একটা জিনিসই বুঝিনি- জীবন ঠিক কতটা লম্বা। প্রতিদিনের আণুবীক্ষণিক পরিবর্তন প্রয়োজনমতো সময় পেলে ‘অতীত আমি’ আর ‘ভবিষ্যৎ আমি’র মধ্যে ঠিক কতটা তফাৎ গড়ে তুলতে পারে- বিশ্বাস করুন, বুঝিনি। ভালবাসায় যে সম্পর্কের সূত্রপাত, তা যে অন্য সব সম্পর্কের থেকে অনেক বেশি দাবি করে, তাও বুঝিনি। যে সহনশীল, চনমনে, দায়িত্ববান যুবককে ভালবেসেছিলাম, সে যে ঠিক কবে এক গম্ভীর, নিয়ন্ত্রণাসক্ত, রসবোধহীন ‘স্বামী’তে পরিণত হয়েছিল, জানিনা। তা-ও, অতীত প্রেমের স্মৃতি, অভ্যেস আর এক অনুচ্চারিত আশাবোধ থেকে বিয়েটা ভাঙিনি। বিদ্রোহ করেছিলাম, নিজের মতো করে।
আসল নামটা নাহয় না-ই বললাম। ধরে নিন ওর নাম তিতির। ওই যে আমায় ‘জেম্মা’ বলে ডাকে আর কি। আগের দিন বলছিলাম না, আমাদের দুই অসমবয়সী বন্ধুর সুখ-দুঃখের কথা- শেষ করেছিলাম স্বগতোক্তি দিয়ে। আজ তার ব্যাখ্যা দেওয়া যাক। সত্যিটা খুব পরিষ্কার। ওর জেঠু বেঁচে থাকলে মোটেই ভাল হতো না। অন্তত আমার পক্ষে। না, লোকটা খারাপ ছিলো না। ভালবেসেই বিয়ে করেছিলাম। তখন কথায় কথায় জীবন শেষ হওয়ার কথা ভাবতাম। জীবনের বিশেষ দাম ছিলো না। ‘ওকে ছাড়া বাঁচবো না’, ‘কলকাতা ছাড়লে বাঁচবো না’, ‘নাচ ছাড়লে মরে যাবো’- এইসব। যারা মুখ বেঁকিয়ে বলতো- ও সব বিয়ের পরে জানালা দিয়ে পালাবে- তাদের উদ্দেশ্যে মনে মনে বলতাম, ‘এত তীব্র আমার অনুভূতি, খামোকা পাল্টাতে যাবে কেন? দেখিয়ে দেবো আমার ধৈর্য আর ভালবাসার কত জোর।’ তখন শুধু একটা জিনিসই বুঝিনি- জীবন ঠিক কতটা লম্বা। প্রতিদিনের আণুবীক্ষণিক পরিবর্তন প্রয়োজনমতো সময় পেলে ‘অতীত আমি’ আর ‘ভবিষ্যৎ আমি’র মধ্যে ঠিক কতটা তফাৎ গড়ে তুলতে পারে- বিশ্বাস করুন, বুঝিনি। ভালবাসায় যে সম্পর্কের সূত্রপাত, তা যে অন্য সব সম্পর্কের থেকে অনেক বেশি দাবি করে, তাও বুঝিনি। যে সহনশীল, চনমনে, দায়িত্ববান যুবককে ভালবেসেছিলাম, সে যে ঠিক কবে এক গম্ভীর, নিয়ন্ত্রণাসক্ত, রসবোধহীন ‘স্বামী’তে পরিণত হয়েছিল, জানিনা। তা-ও, অতীত প্রেমের স্মৃতি, অভ্যেস আর এক অনুচ্চারিত আশাবোধ থেকে বিয়েটা ভাঙিনি। বিদ্রোহ করেছিলাম, নিজের মতো করে।
অসমবয়সী কথোপকথন
১
‘জেম্মা, জেম্মা’ করে পাগল করে দেয় মেয়েটা। নিজে কিচ্ছুটি নাড়বেননা, কোন কাজে হাত দেবেননা, সব কিছু বলে দেবে, করে দেবে ‘জেম্মা’।
বছর খানেক আগে অবধি খাইয়ে দিতেও হতো, একদিন মায়ের তুমুল বকা খেয়ে থেমেছে সেই আদিখ্যেতা। ছোটোখাটো মেয়ে, ড্যাবডেবে চোখ, প্রয়োজন অনুযায়ী ন্যাকা- ঠিক যেমনটা ওই বয়সী ছেলেদের ভাল লাগে, তেমনই। আমারও কি আর ভাল লাগেনা? বেশ লাগে। নিজের মেয়ের মতোই আদরে রেখেছি ওকে। তবে নিজের হলে কি আর এত আদর দিতাম, কে জানে? নিজের ছেলেটি তো ষোল বছর বয়েস থেকেই লায়েক। পাড়া বেড়িয়ে
আর ড্রাম বাজিয়ে সময় কাটিয়ে এখন চাকরির বদলে পার্টি করে। দোষ দিইনা। বাবা মা দু’জনেই চাকরি করলে সন্তানের ওপর দিয়ে কি যায় জানি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে ড্রাগ-টাগ ধরেনি। চিরকালই বাউন্ডুলে। শুধু গত বছর ওর বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে কতক গম্ভীর হয়েছে। তবু সারাদিন বাড়ির বাইরেই থাকে। আমার পেনশনের টাকা আর এতদিনের জমানো টাকার সুদে সংসার ভালই চলে। সংসার মানে যদিও যৌথ সংসার। দেওর কিছু করেননা, কিন্তু ছোট জা বিরাট ব্যবসায়ী। ঘরোয়া সেলাই থেকে শুরু করে এখন টেলারিং এর বেশ বড় ব্যবসা। হেঁসেল আলাদা হলেও ‘ও’র মৃত্যুর পর থেকে সব খরচাই এখন একসঙ্গে হয়। মেয়েটারও দোষ নেই। মা মোটে সময় দিতে পারেনা আর বাবাটি তো অপোগন্ড। কলেজ ফেরতা আমার সঙ্গেই সময় কাটায়।
‘জেম্মা, জেম্মা’ করে পাগল করে দেয় মেয়েটা। নিজে কিচ্ছুটি নাড়বেননা, কোন কাজে হাত দেবেননা, সব কিছু বলে দেবে, করে দেবে ‘জেম্মা’।
বছর খানেক আগে অবধি খাইয়ে দিতেও হতো, একদিন মায়ের তুমুল বকা খেয়ে থেমেছে সেই আদিখ্যেতা। ছোটোখাটো মেয়ে, ড্যাবডেবে চোখ, প্রয়োজন অনুযায়ী ন্যাকা- ঠিক যেমনটা ওই বয়সী ছেলেদের ভাল লাগে, তেমনই। আমারও কি আর ভাল লাগেনা? বেশ লাগে। নিজের মেয়ের মতোই আদরে রেখেছি ওকে। তবে নিজের হলে কি আর এত আদর দিতাম, কে জানে? নিজের ছেলেটি তো ষোল বছর বয়েস থেকেই লায়েক। পাড়া বেড়িয়ে
আর ড্রাম বাজিয়ে সময় কাটিয়ে এখন চাকরির বদলে পার্টি করে। দোষ দিইনা। বাবা মা দু’জনেই চাকরি করলে সন্তানের ওপর দিয়ে কি যায় জানি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে ড্রাগ-টাগ ধরেনি। চিরকালই বাউন্ডুলে। শুধু গত বছর ওর বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে কতক গম্ভীর হয়েছে। তবু সারাদিন বাড়ির বাইরেই থাকে। আমার পেনশনের টাকা আর এতদিনের জমানো টাকার সুদে সংসার ভালই চলে। সংসার মানে যদিও যৌথ সংসার। দেওর কিছু করেননা, কিন্তু ছোট জা বিরাট ব্যবসায়ী। ঘরোয়া সেলাই থেকে শুরু করে এখন টেলারিং এর বেশ বড় ব্যবসা। হেঁসেল আলাদা হলেও ‘ও’র মৃত্যুর পর থেকে সব খরচাই এখন একসঙ্গে হয়। মেয়েটারও দোষ নেই। মা মোটে সময় দিতে পারেনা আর বাবাটি তো অপোগন্ড। কলেজ ফেরতা আমার সঙ্গেই সময় কাটায়।
বাঙ্ময় নৈঃশব্দ্য
“The most terrifying fact about the universe is not that it is hostile but that it is indifferent; but if we can come to terms with this indifference and accept the challenges of life within the boundaries of death- however mutable man may be able to make them- our existence as a species can have genuine meaning and fulfillment. However vast the darkness, we must supply our own light.”
- Stanley Kubrick
উপরের লেখাগুলো পড়ে কি মনে হলো? আঁতেল, তাই না? বিলক্ষণ! এই শতকের অন্যতম সেরা একজন দাড়িবাজ। (সত্যিই দাড়ি ছিল লোকটার, অন্তত যতগুলো ছবি দেখেছি।) ভদ্রলোকের অনেক ছবির মধ্যে একটা হলো- ‘2001: A Space Odyssey’। ভাবতে পারেন, মহাশূন্যে এক স্পেস-স্টেশনে আরেক স্পেস-শিপের ডকিং দেখানো হলো পাক্কা ১৫ মিনিট ধরে! সে তার যতই গভীর অর্থ থাক আর নেপথ্যে যতই জগদ্বিখ্যাত সুরের মূর্ছনা থাক না কেন। অথচ কি আশ্চর্য! সেই কোন ১৯৬৯ সালে তৈরি সিনেমা এতদিন পর দেখতে বসেও মনে হয়, কি করে করেছিল লোকটা? হাঁ হয়ে যেতে হয় এখনো। এ দেখলে তর্ক উঠতে বাধ্য, যে কোন পরিচালক যদি শুধু সৌন্দর্যের জন্যেই খরচ করতে চান একটা গোটা সিনেমা, তবে তাতে কি অর্থ যোগ করা সম্ভব? নাকি ভবিষ্যৎ তা দেখতে বসে মাঝপথে উঠে চলে যাবে- এই সব মিলিয়ে মনের মধ্যে যে নিরাকার একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ রূপ পেল এই সেদিন রাতে, যখন বারাকা (Baraka, ১৯৯২) দেখলাম।
অন্য কোথাও, অন্য কোনখানে
৬ সহস্র পীতবর্ষ:
আজ উইসিনুন চলে গেল। নিঃশব্দে। অনেকদিন ভাবার পরেই নিল সিদ্ধান্তটা। জানতাম, তৈরিও ছিলাম, কোন অনুতাপ বা শিশুসুলভ টানও ছিলনা। তবু আমায় পেয়ে বসেছে এই ‘বিষণ্ণতা’। সামনের ঝর্ণার জল, নতুন কোন গবেষণা- এমনকি ওই হলুদ নক্ষত্রের দিগন্ত পার করা, যাকে এখন সবাই বলি বিসর্জন- কিছুই আর ঠিক সেই ইচ্ছে জাগাতে পারছেনা পরের দিনের সব কাজ করার। এ এক অদ্ভুত রোগ। চিকিৎসা আজও আমাদের অজানা। আমাদের গ্রহে এর অস্তিত্বও কেউ জানেনা, কিন্তু এখানে! একটা গোটা প্রজাতি উজাড় হয়ে গেল এই মহামারীতে। উইসিনুন, উওয়ারুহ্ন, উইনিড্রোন- সব তাবড় প্রকৃতিবিদ হার মেনেছিল এর কাছে। সবাই শেষ অবধি মেনে নিয়েছিলাম, এটা এই গ্রহেরই আবহাওয়ার কোন বৈশিষ্ট্য- কারণ ছাড়াই মানসিক অবস্থার হঠাৎ পরিবর্তন আর অদ্ভুত এক জীবন-বিমুখ অভিব্যক্তি গ্রাস করে রোগীকে। লজ্জাজনক এক বিষয়ে অপরিসীম গুরুত্ব আরোপ করে তখন সে- আত্মচিন্তা। প্রজাতি নয়, তার কাছে তখন বড় হয়ে ওঠে ওই সামান্য অস্তিত্ব- নিজ দেহ-মন। আমি মোউন-উহ্, একমাত্র নিরোগ প্রাণ অবশিষ্ট আছি এই প্রজাতির। সেও বোধহয় আর ঠিক থাকলো না। আমিও ‘বিষণ্ণ’।
আর কেউ থাকলো না। উইসি- ওকে শেষ দিকে এই বলেই ডাকতে শুরু করেছিলাম, ও-ও আর আপত্তি করতো না- সবচেয়ে শক্ত ছিলো বলে আজ অবধি ছিলো। নইলে... ওর কথা এত মনে পড়ছে... আমিও কি একই দিকে এগোচ্ছি?
ডুমুর গাছে কিছুক্ষণ
ডেভিড অ্যাটেনবরো র খুব পছন্দের বিষয় হলো বর্ষাবন (Rainforest)। এর অগণন প্রজাতি, বেঁচে থাকার লড়াই আর প্রতিনিয়ত একসাথে অভিনীত হওয়া অসংখ্য টানটান নাটক- সব কিছুই মনে হয় তাঁকে আর তাঁর কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে যুক্ত আমাদের সকলকে বর্ষাবন নিয়ে অদ্ভুত কৌতূহলী করে তোলে। Planet Earth- এই টিভি সিরিজটি, IMDB(Internet Movie Database) র মতে দুনিয়ার সর্বাধিক সুপারিশ(rating) পাওয়া শো। আজ দুপুরে এর বর্ষাবন নিয়ে তৈরি episode টায় দেখি, সেই মহারণ্যের সবচেয়ে চাহিদার আর সবথেকে বাসযোগ্য অঞ্চল হলো জঙ্গলের ছাদ(Canopy)। সেখানেই শেষ নয়, সবচেয়ে নামকরা গাছ হলো ডুমুর(Fig)। সারা বচ্ছর ফল ধরে বলে, সেখানে সব সময়েই প্রচুর প্রজাতির বাঁদর ঘুরে বেড়ায়। সে যে কত্ত রকমের বাঁদর, তা আর কি বলবো- ছোট, বড়, বেঁটে, লম্বা, গম্ভীর-চুপচাপ, গলা-ফোলা গলাবাজ... সব্বাই এসে জড় হয় ওই এক গাছে। সেখান থেকেই তারা নিজেদের সীমানা ঘোষণা করে, কমজোরদের গলা-ধাক্কা দেয়, প্রচুর পরিমাণে খায় আর খাওয়া হয়ে গেলে মহানন্দে দোল খায়। এর সাথে আমি কল্পচক্ষে যোগ করে নিলাম পরিচিত বাঁদর-সুলভ অন্যান্য আচরণ- উকুন বাছা, খুনসুটি, নিজের গায়ে হাত বোলানো আর সর্বোপরি, ভাব-গম্ভীর হয়ে বসে থাকা। অসাধারণ ক্যামেরা, বর্ণন আর চোখ জুড়নো দৃশ্যাবলি ছাপিয়ে কেন কে জানে আনমনা হয়ে পড়লুম। মনে পড়ে গেলো মাসখানেক আগের এক low-contrast বিকেলের কথা। মঞ্চ গাছের ডাল নয়- সমুদ্রতীর, আর জায়গাটা জঙ্গল বটে, তবে ইঁট-কাঠের।
হতে পারতো
হতে পারতো – ১
সই...
এখন এই শেষ মুহূর্তে বড্ড তোর কথা মনে পড়ছে। তুই থাকলে বলতি’ – এটা কোন কায়দাই নয় – তবু অন্য বিকল্প নেই আর। আছে কি? কাকে লিখছি, কেন লিখছি, কে পড়বে – ভাবতে বসিনি। আমারই তো মন, সেই মনের কথা। আর কিছু পরে, যখন মনটাই থাকবেনা, তখন আর এই প্রশ্নগুলো কোন
অর্থ বহন করবে, বল্?
তোর আমার গোটা জীবনটা শুধু আমাদের। অবর্তমানেও কাউকে সেখানে উঁকি দিতে দেবোনা। কিন্তু সবাইকে, এমনকি নিজেকেও একবার জোরে বলা উচিত আজকের এই সিদ্ধান্তের কারণ। অনেকদিন আগে থেকেই জানতাম ধ্রুব সত্যটা – ‘সব সফল ভালবাসায় ছেদ টানে মৃত্যু’। জানা আর বোঝা কি এক? বুঝিনি কিছু। তোর ঝুপ্ করে চলে যাওয়ার পর বুঝলাম। সে যে কি বিষম বোঝা হয়ে দাঁড়াল- একা আমিই জানি।
সই...
এখন এই শেষ মুহূর্তে বড্ড তোর কথা মনে পড়ছে। তুই থাকলে বলতি’ – এটা কোন কায়দাই নয় – তবু অন্য বিকল্প নেই আর। আছে কি? কাকে লিখছি, কেন লিখছি, কে পড়বে – ভাবতে বসিনি। আমারই তো মন, সেই মনের কথা। আর কিছু পরে, যখন মনটাই থাকবেনা, তখন আর এই প্রশ্নগুলো কোন
অর্থ বহন করবে, বল্?
তোর আমার গোটা জীবনটা শুধু আমাদের। অবর্তমানেও কাউকে সেখানে উঁকি দিতে দেবোনা। কিন্তু সবাইকে, এমনকি নিজেকেও একবার জোরে বলা উচিত আজকের এই সিদ্ধান্তের কারণ। অনেকদিন আগে থেকেই জানতাম ধ্রুব সত্যটা – ‘সব সফল ভালবাসায় ছেদ টানে মৃত্যু’। জানা আর বোঝা কি এক? বুঝিনি কিছু। তোর ঝুপ্ করে চলে যাওয়ার পর বুঝলাম। সে যে কি বিষম বোঝা হয়ে দাঁড়াল- একা আমিই জানি।
শ্রেণী-সংগ্রামের পর...
ছপছপে জল টিপটিপ ঝরে
পিঁপড়ে পাতার কুঁকড়ো শির
থইথই জল, বঙ্গ অচল
জলের লাইনে বড্ড ভিড়।
ছাপা শাড়ি + ছ্যাঁকছ্যাঁকে গলা,
‘বংশোদ্ধার’ বিড়বিড়ে বলা-
নেহাৎ দু’হাতে বোতল ধরেছি,
নইলে, হুঁ হুঁ, ‘বংশ আছোলা...’
আসছি যখন, খান দুত্তিন
কোরাস গাইছে, ছন্দ-বিহীন-
‘ছাপা’? out of দৃষ্টিপথ-
তাদের তখন ‘উলটোরথ’;
পিঁপড়ে পাতার কুঁকড়ো শির
থইথই জল, বঙ্গ অচল
জলের লাইনে বড্ড ভিড়।
বিদেশি চটির এশীয় queue
এক কণা জমি ছাড়েনি কেউ।
দু’হাতে বোতল, ফেনিল স্বর
মনেই রাখিনি- কে কার পর।
ছাপা শাড়ি + ছ্যাঁকছ্যাঁকে গলা,
‘বংশোদ্ধার’ বিড়বিড়ে বলা-
নেহাৎ দু’হাতে বোতল ধরেছি,
নইলে, হুঁ হুঁ, ‘বংশ আছোলা...’
গোটা দশ বারো ছাপা শাড়ি
আর খান দুত্তিন নোক- ভদ্দর।
সাড়ে বারোটায় জল ‘সারা’ হলে
‘শুরু’ তো হবেই, চাপান-উতোর!
আসছি যখন, খান দুত্তিন
কোরাস গাইছে, ছন্দ-বিহীন-
‘ছাপা’? out of দৃষ্টিপথ-
তাদের তখন ‘উলটোরথ’;
খান চব্বিশ বোতল হাতে,
শাড়ি- দঙ্গলে কূজন-তান,
Got-up ঝগড়া, কিঁচমিচ শেষে
সবাই সফল, গণ-মুসকান।
***********************************************
৬ মাত্রা। মাত্রাবৃত্ত
ধরমবীর- ভিড়ধর্ম
আবার চলে এয়েচি দ্বিধান্বিত(ভক্ত) ওষ্ঠাধরে কিছু প্রাণের-মনের কথা প্রাণের ভয় না রেখে বলে ফেলবো বলে। বিশেষ কাজ কোনদিনই ছিলনা। তাই এই শ্রাবণে, আষাঢ়ে নিবন্ধের সূত্রপাতে বেশী motivation এর প্রয়োজন হয়নি। রামকৃষ্ণের ওই কালো মেঘে সাদা বক দেখার মত(আচ্ছা, কিছু মনে করবেন না, হঠাৎ মনে হল, অন্য কোন বেয়াদব ছেলের ‘বক’ দেখানোয় ওই তুরীয়াবস্থা প্রাপ্তি ঘটেনি তো?), খবরের কাগজে কোন এক জনসভার একটা ছবি দেখে আমার গভীর ভাবোদয় হল। সে কথাই বলব-
গুছিয়ে বলার দায় কোনদিনই ছিলনা, তবু দেখা যাক।
Carl Sagan এর Cosmos সিরিজটি বেশ লাগে আমার, অধিকাংশ না বুঝেই। তার এক episode এ ভদ্রলোক দেখালেন, ক্ষুধা-তৃষ্ণা-যৌনতা-ঈর্ষা-চ্যালাগিরি –এই সব বোধের জন্ম মগজের ভিতরের এক অংশে, যার সঙ্গে সরীসৃপের মগজের দারুণ মিল, আর বিবর্তনের নিয়মে নাকি এই অংশের উৎপত্তি ওই ‘ঠাণ্ডা’ মাল গুলো থেকেই। এর চারপাশ ঘিরে আছে যে মগজ, তা স্তন্যপায়ীদের সম্পত্তি, একেই আমরা মস্তিষ্ক/হৃদয় বলে থাকি। বাকি সব নিয়ে কিছু বলার নেই, কিন্তু ওই ‘চ্যালাগিরি’ ব্যাপারটা নিদারুণ আদিম জেনে আমার বড় আমোদ হল। কি imply করে এই তথ্য? অবশিষ্ট Basic Instinct গুলোর মত তত গুরুত্ব পায়না কেন এই অনুভূতি?
গুছিয়ে বলার দায় কোনদিনই ছিলনা, তবু দেখা যাক।
Carl Sagan এর Cosmos সিরিজটি বেশ লাগে আমার, অধিকাংশ না বুঝেই। তার এক episode এ ভদ্রলোক দেখালেন, ক্ষুধা-তৃষ্ণা-যৌনতা-ঈর্ষা-চ্যালাগিরি –এই সব বোধের জন্ম মগজের ভিতরের এক অংশে, যার সঙ্গে সরীসৃপের মগজের দারুণ মিল, আর বিবর্তনের নিয়মে নাকি এই অংশের উৎপত্তি ওই ‘ঠাণ্ডা’ মাল গুলো থেকেই। এর চারপাশ ঘিরে আছে যে মগজ, তা স্তন্যপায়ীদের সম্পত্তি, একেই আমরা মস্তিষ্ক/হৃদয় বলে থাকি। বাকি সব নিয়ে কিছু বলার নেই, কিন্তু ওই ‘চ্যালাগিরি’ ব্যাপারটা নিদারুণ আদিম জেনে আমার বড় আমোদ হল। কি imply করে এই তথ্য? অবশিষ্ট Basic Instinct গুলোর মত তত গুরুত্ব পায়না কেন এই অনুভূতি?
বিদায়-পরিচিত
যে দু’একটা কাজ অল্প অল্প করতে পারি বলে আমার ধারণা, তার একটা আজ করার চেষ্টা করব। সেটা হ’ল সিনেমার গল্প বলা। কাজটা কঠিন নয়, তবে ইচ্ছে আছে গল্পের সঙ্গে অন্য একটা কাজও করার। সে কথায় পরে আসছি। যে সিনেমার কথা আজ বলব, সেটা হয়তো অনেকে দেখেছেন। যদি জানতে ইচ্ছে করে সিনেমার ‘রেটিং’, জ্ঞানীজনের ‘রিভিউ’, তবে এখানে দেখে লাভ নেই। আমি সে সবে যাব না, যাওয়ার ক্ষমতাও নেই। আমি শুধু নিজের মতো করে গল্প বলবো। যারা দেখেননি, তাদের একটু কষ্ট করে ছবিটা দেখতে বলবো। যারা দেখেছেন, তারাও যদি লেখাটা পড়ে ছবিটা আর একবার দেখতে চান, তবে লেখা সার্থক মনে করবো।
এক উৎসাহী, সরল মুখের ‘Cello’বাদক (দিব্যি বড়সড় বেহালার মত দেখতে একটা যন্ত্র), সদ্য সুযোগ পেয়েছে কনসার্ট-এ বাজানোর। বিনা মেঘে বজ্রাঘাতের মতো জানতে পারে যে তার দলটা ভেঙে দেওয়া হ’ল। ঘরে তার মিষ্টি বউ। নিজের স্বপ্নের সমাধির দুঃখকে যদিও ছাপিয়ে যায় শেকল কাটার আনন্দ, (‘চেলো’ টা বিক্রি ক’রে) তবু কুন্ঠাবোধ ক’রে ‘Web-designer’ বউকে দেশের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দিতে। কিমাশ্চর্যমতঃপরম্! বউ প্রায় আমাদের দেশের সিরিয়ালের ‘বহু’দের মতো এক কথায় রাজী হয়ে যায় নিজের কেরিয়ার জলাঞ্জলি দিয়ে ছেলেটার সঙ্গে চলে যেতে। (এইটুকুতেই মেয়েটার প্রেমে পড়বেনা, এমন বাঙালি ছেলে বিরল, তায় বড্ড মিষ্টি দেখতে!) দেশে ফিরে শুরু হয় চাকরির চেষ্টা, আর প্রথমেই চোখে পড়ে এক কোম্পানির বিজ্ঞাপন, যা দেখে মনে হয় বোধহয় ট্রাভেল কোম্পানি। ছেলেটি দেখা করতে গেলে হবু ‘বস্’ ইন্টারভিউয়ের নামে যা করলেন, তা এদেশে হামেশা বন্ধুর ছেলেকে চাকরি দিতে করা হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে ছেলেটির সাথে আমরাও জানতে পারি, কি এক অদ্ভুত কাজে জড়িয়ে পড়েছে সে।
এক উৎসাহী, সরল মুখের ‘Cello’বাদক (দিব্যি বড়সড় বেহালার মত দেখতে একটা যন্ত্র), সদ্য সুযোগ পেয়েছে কনসার্ট-এ বাজানোর। বিনা মেঘে বজ্রাঘাতের মতো জানতে পারে যে তার দলটা ভেঙে দেওয়া হ’ল। ঘরে তার মিষ্টি বউ। নিজের স্বপ্নের সমাধির দুঃখকে যদিও ছাপিয়ে যায় শেকল কাটার আনন্দ, (‘চেলো’ টা বিক্রি ক’রে) তবু কুন্ঠাবোধ ক’রে ‘Web-designer’ বউকে দেশের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দিতে। কিমাশ্চর্যমতঃপরম্! বউ প্রায় আমাদের দেশের সিরিয়ালের ‘বহু’দের মতো এক কথায় রাজী হয়ে যায় নিজের কেরিয়ার জলাঞ্জলি দিয়ে ছেলেটার সঙ্গে চলে যেতে। (এইটুকুতেই মেয়েটার প্রেমে পড়বেনা, এমন বাঙালি ছেলে বিরল, তায় বড্ড মিষ্টি দেখতে!) দেশে ফিরে শুরু হয় চাকরির চেষ্টা, আর প্রথমেই চোখে পড়ে এক কোম্পানির বিজ্ঞাপন, যা দেখে মনে হয় বোধহয় ট্রাভেল কোম্পানি। ছেলেটি দেখা করতে গেলে হবু ‘বস্’ ইন্টারভিউয়ের নামে যা করলেন, তা এদেশে হামেশা বন্ধুর ছেলেকে চাকরি দিতে করা হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে ছেলেটির সাথে আমরাও জানতে পারি, কি এক অদ্ভুত কাজে জড়িয়ে পড়েছে সে।
Life in a …..
নদী-পারে সেই- ঘন জঙ্গল,
ঘন জঙ্গলে হাওয়া পাক খায়।
মহা-নাগ সেই স্থানু অজগর,
ধু-ধু করে তার অনাদি জঠর...
সাজানো-গোছানো পিছল শ্মশানে,
ভিড়ের ভিতর কিভাবে কে জানে;
অজ-গহ্বরে মিশে যায় কিছু
ছায়া-মানুষের প্রাণ...
ঘন জঙ্গলে হাওয়া পাক খায়।
রাজা নেই তার, রাণী আছে এক;
ঘিরে সীমানা- ব’সে পাহারায়।
মহা-নাগ সেই স্থানু অজগর,
ধু-ধু করে তার অনাদি জঠর...
হপ্তা-দুয়েকে ডাক পড়ে তার
নর-মাংসের আহুতি নেওয়ার-
সাজানো-গোছানো পিছল শ্মশানে,
ভিড়ের ভিতর কিভাবে কে জানে;
অজ-গহ্বরে মিশে যায় কিছু
ছায়া-মানুষের প্রাণ...
হাওয়া পাক খায় ঘন জঙ্গলে,
ফিশফিশে কথা কানে-কানে বলে
“স্বাগত তাদের মেট্রো-স্টেশনে;
যারাই পালাতে চান......”
***********************************************
৬ মাত্রা। মাত্রাবৃত্ত
স্নেহের আঁতোয়ানেৎ
তুমি বিষ খাওনা জানি,
সে তোমার ঔদার্য।
আমি নয় বন্য প্রাণী,
শুঁকলেও রাগ করছ?
এত দাম তুচ্ছ নেশার,
তবু কেন নীলকন্ঠ?
বেশ তো ভালই ছিলাম,
কবে সব গরল হ’লো?
তুমি বিষ খাওনা জানি,
সে বিলাস তোমায় মানায়,
যত হই তুচ্ছ প্রাণী
ও কি কেউ সাধ ক’রে খায়?
***********************************
৪ মাত্রা। স্বরবৃত্ত(?)
সে তোমার ঔদার্য।
আমি নয় বন্য প্রাণী,
শুঁকলেও রাগ করছ?
মাইরি, ভালই খেতে-
নেশা হয়, একটুখানি-
খোঁয়ারি? মরণযাপন;
ভ্রান্তির মাসুল গেঁথে।
এত দাম তুচ্ছ নেশার,
তবু কেন নীলকন্ঠ?
বেশ তো ভালই ছিলাম,
কবে সব গরল হ’লো?
গর্দানে শেকল-মালা
তদ্দিনে কামড় বসায়
বিষ-দাঁত সবার গজায়,
কেউ কেউ বর্ম পরে।
তুমি বিষ খাওনা জানি,
সে বিলাস তোমায় মানায়,
যত হই তুচ্ছ প্রাণী
ও কি কেউ সাধ ক’রে খায়?
***********************************
৪ মাত্রা। স্বরবৃত্ত(?)
বাঁদর? আমি? বাঁদরামি!!
ছোটবেলায় আমার সমসাময়িক অনেকেই ভাবতো যে অতীতে দুনিয়াটা সাদা-কালো ছিল। আজ এত বছর পর পরিষ্কার দেখতে পাই দুনিয়াটা আসলে শুধুই সাদা।
ক্যানভাসের মত।
ক্যানভাসের রঙ কি? তুমি যা চাপিয়েছ? মোটেই না, ওটা এখনো সাদা, তোমার কল্পনা এখন ছবি হয়ে ক্যানভাসে সাময়িক বসে আছে মাত্র। গো-ও-টা দুনিয়া, আলাদা করে সমস্ত মানুষ, তাদের মন, আসলে সাদা। বাকিরা তার ওপর নিজের মনের রঙ চাপিয়ে দিই, আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা সেটা বিশ্বাস করতে শুরু করে। তখন জগৎটা অনেক রঙে ভেঙ্গে যায়। আমাদের মত আংশিক বর্ণান্ধ রাজ্যে অবশ্য শুধুই লাল আর সবুজ দেখা যায়।
গৌরচন্দ্রিকা বাদ দিয়ে আসল কথা বলা যাক, আমার মতো বহু মানুষের হয়ে আজ কিছু ঝাল ঝাল কথা বলব। আমার মতো মানে- তৃতীয় পক্ষ। কেন ঝাল ঝাল? কারণ আমার অল্প একটু রাগ হয়েছে। কিসের রাগ? কেন রাগ? দেখালেই বা দেখছে কে? হুম্, বলছি। এ যুগে রাগের যথেষ্ট কারণ নেই, এ কথা আজকাল বৌদ্ধ লামারাও বিশ্বাস করেনা(Anger Management সিনেমাটা দেখেছেন?)। তাও যে আমরা দেখাইনা, সেটা স্বজাতি-প্রীতিতে। সকলেই তো একই অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলেছে, আর বোঝা বাড়িয়ে লাভ কি? কিন্তু বস্, প্রেশার কুকার এরও safety valve থাকে। আমি শুধু আমার কথা বলব, আমার অবস্থা বলব, তাতে কারুর মনের কথা বলা হ’লে, support করতে হবে না, কারণ তাতে ভয় থাকতে পারে, কিন্তু আমায় জানাবেন।
ক্যানভাসের মত।
ক্যানভাসের রঙ কি? তুমি যা চাপিয়েছ? মোটেই না, ওটা এখনো সাদা, তোমার কল্পনা এখন ছবি হয়ে ক্যানভাসে সাময়িক বসে আছে মাত্র। গো-ও-টা দুনিয়া, আলাদা করে সমস্ত মানুষ, তাদের মন, আসলে সাদা। বাকিরা তার ওপর নিজের মনের রঙ চাপিয়ে দিই, আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা সেটা বিশ্বাস করতে শুরু করে। তখন জগৎটা অনেক রঙে ভেঙ্গে যায়। আমাদের মত আংশিক বর্ণান্ধ রাজ্যে অবশ্য শুধুই লাল আর সবুজ দেখা যায়।
গৌরচন্দ্রিকা বাদ দিয়ে আসল কথা বলা যাক, আমার মতো বহু মানুষের হয়ে আজ কিছু ঝাল ঝাল কথা বলব। আমার মতো মানে- তৃতীয় পক্ষ। কেন ঝাল ঝাল? কারণ আমার অল্প একটু রাগ হয়েছে। কিসের রাগ? কেন রাগ? দেখালেই বা দেখছে কে? হুম্, বলছি। এ যুগে রাগের যথেষ্ট কারণ নেই, এ কথা আজকাল বৌদ্ধ লামারাও বিশ্বাস করেনা(Anger Management সিনেমাটা দেখেছেন?)। তাও যে আমরা দেখাইনা, সেটা স্বজাতি-প্রীতিতে। সকলেই তো একই অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলেছে, আর বোঝা বাড়িয়ে লাভ কি? কিন্তু বস্, প্রেশার কুকার এরও safety valve থাকে। আমি শুধু আমার কথা বলব, আমার অবস্থা বলব, তাতে কারুর মনের কথা বলা হ’লে, support করতে হবে না, কারণ তাতে ভয় থাকতে পারে, কিন্তু আমায় জানাবেন।
চলতি কা নাম দাড়ি
তা, বছর দশেক হবে মন দিয়ে ফিলিম দেখছি। সে অনেক ফিলিম, নিজেরই ভাল মনে নেই অনেক।ও সর্বনাশা নেশায় অনেক কিছুই পোড়ায়। যা এত বছর, এত প্রযুক্তি, এত টাকা ধ্বংস করার পরেও ভাল করে বুঝিনি, তা হল সিনেমার দর্শককে। অথচ, যে যাই বলুক, এক ছাড়া আর অপূর্ণ। “আপনি সিনেমা দেখেন কেন?” ভাল লাগে বলে। “লোকে সিনেমা বানায় কেন?” ভাল বানালে ভাল তো লাগেই, আর সেটা লোকের ভাল লাগলে আরও ভাল। কোনটা ভাল, আর কোনটা নয়, এই প্রায় ব্রহ্মাণ্ড-বয়সী প্রশ্নের উত্তরও একই ধরনের আর গড়নের নেবুলায় ঢাকা। কলেজ স্ট্রীট আঁতেলের আগমার্কা উত্তর- “পাব্লিকের যা ভাল লাগে, তা খারাপ; যা দেড়েলের ভাল লাগে, তাই ভাল।” ইদ এস্ত, পাব্লিক আর দেড়েল এক দোকানে চা খায়না। এবার আরও মজা, পাব্লিক থেকে একটি মাল কে বের করে কোনঠাসা করুন, ব্যস, হয় তার খোঁচা খোঁচা দাড়ি গজাবে, নয়তো দেখবেন Gillette এর ওপর রাগ করে মাটিতে ভাত খায়। বলুন, আপনার কি করণীয়? আপনি হয় দিনে দেড়েলের সঙ্গে ঘুরবেন আর রাতে বউকে নিয়ে স্ল্যাপ্স্টিক দেখবেন (ও হ্যাঁ, বউরা in general কোন গোত্রেই পড়েনা, তবে সে আর এক দিনের কথা), নয়তো কিম-কি-দুক শুনে বুক চিতিয়ে বিষম খাবেন। এ ছাড়া কোন অন্য রাস্তা নিলে আসুন, আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড হয়ে যান। আমার রাস্তা অতি দুঃখের, সে কথায় পরে আসছি।
বিষণ্ণ JANUS
নিশিদিন বাজে বীন, নেচে চলে বসুধা
ধা ধিন ধিন ধা, ধা ধিন ধিন ধা;
লেখালেখি ছেড়ে দেব, করি বসে চিন্তা
প্রকাশ নাই বা হ’লো ভাবনার দীনতা।
বয়স যদিও কম, কাঁধ জুড়ে ধরাভার
ক’টি দাগ রেখে যাব ক্যানভাসে দুনিয়ার
কোন তালে যাবে জুড়ে ভাঙা গান, ছেঁড়া তার
ধা ধিন ধিন ধা, ধা ধিন ধিন ধা;
লেখালেখি ছেড়ে দেব, করি বসে চিন্তা
প্রকাশ নাই বা হ’লো ভাবনার দীনতা।
বয়স যদিও কম, কাঁধ জুড়ে ধরাভার
ক’টি দাগ রেখে যাব ক্যানভাসে দুনিয়ার
কোন তালে যাবে জুড়ে ভাঙা গান, ছেঁড়া তার
ধা ধিন ধিন ধা, না তিন তিন তা...
দু'টি পুরনো লেখা
অল্প কিছু বিরক্তি
এইটাই আমার স্বাভাবিক লেখার ভাষা। ইঞ্জিরিতে লিখতে গিয়ে সে এক কেলোর কীর্তি হয়েছিল। লোকের অনেক আগে নিজের চোখেই সেই সব লেখা জোলো লাগছিল। এই ব্লগে যা ইচ্ছে হয় লিখবো, বিষয় আর ধরণ নিয়ে মাথা ঘামাতে হবেনা। তবে, যারা পড়বেন, তাঁদের একটিই অনুরোধ, বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দেবেন।
সে সব কথা থাক। প্রথমে কিছু অপ্রিয় আলোচনা সেরে নেওয়া যাক। বম্বেয় আবার সিরিজ বিস্ফোরণ। প্রাণের দাম আবার তলানি তে এসে ঠেকেছে। চায়ের দোকানে সকালের পেপার হাতে বসার আগে দাদু জিগোচ্ছেন: "কি হে? ক'টা গেলো?", উত্তরে দু'অঙ্কের সংখ্যা শুনে হতাশ হচ্ছেন, কিন্তু মুহুর্তে নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছেন। ফেসবুকে প্রবাসী বাঙ্গালী Status Update দিচ্ছে "এরপরেও ওসামা কে মারা খারাপ বলবে কিছু ভারতীয় বুদ্ধিজীবী, নিজেদের 'উদারপন্থী' দেখানোর আশায়; কিন্তু এতগুলো লোক মরলো, টুঁ শব্দটিও করবেনা।" অন্য একজন: "কাসভ বাবাজী, এর পরেও তুমি বহাল তবিয়তে থাকবে, তোমার মৃত্যুদণ্ড বহাল হওয়া অবধি এই দেশটা টিকলে হয়।"
এইটাই আমার স্বাভাবিক লেখার ভাষা। ইঞ্জিরিতে লিখতে গিয়ে সে এক কেলোর কীর্তি হয়েছিল। লোকের অনেক আগে নিজের চোখেই সেই সব লেখা জোলো লাগছিল। এই ব্লগে যা ইচ্ছে হয় লিখবো, বিষয় আর ধরণ নিয়ে মাথা ঘামাতে হবেনা। তবে, যারা পড়বেন, তাঁদের একটিই অনুরোধ, বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দেবেন।
সে সব কথা থাক। প্রথমে কিছু অপ্রিয় আলোচনা সেরে নেওয়া যাক। বম্বেয় আবার সিরিজ বিস্ফোরণ। প্রাণের দাম আবার তলানি তে এসে ঠেকেছে। চায়ের দোকানে সকালের পেপার হাতে বসার আগে দাদু জিগোচ্ছেন: "কি হে? ক'টা গেলো?", উত্তরে দু'অঙ্কের সংখ্যা শুনে হতাশ হচ্ছেন, কিন্তু মুহুর্তে নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছেন। ফেসবুকে প্রবাসী বাঙ্গালী Status Update দিচ্ছে "এরপরেও ওসামা কে মারা খারাপ বলবে কিছু ভারতীয় বুদ্ধিজীবী, নিজেদের 'উদারপন্থী' দেখানোর আশায়; কিন্তু এতগুলো লোক মরলো, টুঁ শব্দটিও করবেনা।" অন্য একজন: "কাসভ বাবাজী, এর পরেও তুমি বহাল তবিয়তে থাকবে, তোমার মৃত্যুদণ্ড বহাল হওয়া অবধি এই দেশটা টিকলে হয়।"
Subscribe to:
Posts (Atom)